23 Nov 2024, 01:35 am

জাতিসংঘে সর্বসম্মতিক্রমে রোহিঙ্গা রেজুলেশন গৃহীত

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে বুধবার (১৫ নভেম্বর) মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি শীর্ষক রেজুলেশন সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। রেজুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করে ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

এবারের রেজুলেশনে ১১৪ দেশ সহ-পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করেছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

বেশ গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয় উঠে এসেছে এ বছরের রেজুলেশনে। ১২ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের উদারতা এবং মানবিক সহায়তার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে এতে। ভাসানচর প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি বিশেষ কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়েছে। মিয়ানমারের অবনতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি রোহিঙ্গা সংকটের মূল কারণ উদ্ঘাটন করতে এবং মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের লক্ষ্যে রাখাইনে অনুকূল পরিবেশ তৈরির জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি গৃহীত ২৬৬৯ রেজুলেশনকে স্বাগত জানায় এটি, যাতে পরিষদের সদস্যরা মিয়ানমারে সব ধরনের সহিংসতার অবিলম্বে অবসানের দাবি জানায়। এতে বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন ত্বরান্বিত করতে আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐকমত্যের দ্রুত বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলার অগ্রগতি এবং আন্তজার্তিক অপরাধ আদালতের প্রসিকিউশনের তদন্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। সর্বোপরি, ‘রেসপনসিবিলিটি অ্যান্ড বার্ডেন শেয়ারিং’ নীতির আওতায় যাতে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো বাংলাদেশে মানবিক আশ্রয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা অব্যাহত রাখে, সে বিষয়ে জোরালো আহ্বান জানানো হয়েছে এবারের রেজুলেশনে।

রেজুলেশনটি গৃহীত হওয়ার পর জাতিসংঘে বাংলাদশ স্থায়ী মিশনের প্রতিনিধি তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ একটি ছোট দেশ যেখানে জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব এবং খুব সীমিত সম্পদ রয়েছে। আমাদের ভূখণ্ডে রোহিঙ্গাদের দীর্ঘস্থায়ী উপস্থিতির কোনো সুযোগ নেই। অবশ্যই তাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারে ফিরে যেতে হবে।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ এবং মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের জন্য মিয়ানমার সরকারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতির উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি। এ ব্যাপারে আসিয়ানসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি তাদের সমর্থন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি। রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের আগে বাংলাদেশে অস্থায়ী ক্যাম্পে বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক অংশীদারদের কাছ থেকে পর্যাপ্ত অর্থায়নের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

চলমান বিভিন্ন বৈশ্বিক সংঘাতের পরিপ্রেক্ষিতে, রেজুলেশনটিতে জাতিসংঘের অসংখ্য সদস্য রাষ্ট্রের সহ-পৃষ্ঠপোষকতা এক অনন্য সফলতার ইঙ্গিতবাহক। রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় এটা বিশ্বব্যাপী সংহতির একটি শক্তিশালী সংকেতবাহক। জাতিসংঘের আলোচ্যসূচিতে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিকে জীবন্ত এবং গুরুত্ববহ করে রাখার জন্য বাংলাদেশ ওআইসি এবং ইইউকে তাদের নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ জানায়।

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

  • Visits Today: 8542
  • Total Visits: 1272741
  • Total Visitors: 4
  • Total Countries: 1668

আজকের বাংলা তারিখ

  • আজ শনিবার, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ ইং
  • ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ (হেমন্তকাল)
  • ২০শে জমাদিউল-আউয়াল, ১৪৪৬ হিজরী
  • এখন সময়, রাত ১:৩৫

Archives